আল শাহারিয়া

বব মার্লেঃ লম্বা জটধারী এক রকস্টার

বব মার্লের নাম কমবেশি আমরা অনেকেই শুনেছেন। তার পুরো নাম নেস্তা রবার্ট মার্লে বা বব মার্লে। তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। তিনি সারা জীবন জনমানুষের গান গেয়েছেন। তৃতীয় বিশ্বের কোনও দেশ থেকে উঠে আসা রক শিল্পীর মধ্যে যাঁর নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তাঁর নাম হলো বব মার্লে। একাধারে গায়ক, গীতিকার এবং সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তিনি। তিনি জ্যামাইকায় জন্মগ্রহণ করেন। ইয়েরগে মিউজিকের ধারাকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে সব চেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর।

গান লেখায় বব মার্লের ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। গানও যে প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে তা বিশ্ববাসীর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন বব মার্লে। তিনি গেয়েছেন ‘নো ওম্যান নো ক্রাই’-এর মতো গানও।

বব মার্লে; ছবিঃ সংগৃহীত

লম্বা জটাধারী চুলের বব মার্লে সবসময় মানবতার পক্ষে গান গাইতেন। তার অবস্থান ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের পক্ষে। নিপীড়িত আর খেটে খাওয়া মানুষের জন্য গান গাইতেন তিনি। তিনি সবসময় সবাইকে বলতেন এক হতে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর চলতে থাকা নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন তার গানের মাধ্যমে। অধিকারবঞ্চিত মানুষের পক্ষ নিয়ে তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করেন। নিজ দেশের রাজনৈতিক সংঘাত মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। তিনি শান্তির জন্য কয়েকটি কনসার্ট করেছিলেন জ্যামাইকায়। এসব কনসার্টের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের এক মঞ্চে আনার চেষ্টা করতেন। বব মার্লে তাঁর পুরো ক্যারিয়ারেই যুক্ত ছিলেন রাসটাফারি আন্দোলনের সঙ্গে। জীবনঘনিষ্ঠ গান গাইতেন বলেই বিশ্বজুড়ে মার্লের প্রচুর জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অনেক কনসার্ট করেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে তাঁর ‘বব মার্লে এন্ড দ্য ওয়েইলার্স’ অ্যালবামকে ‘বিশ শতকের সেরা অ্যালবাম’ নির্বাচিত করে টাইম ম্যাগাজিন।

বব মার্লে “গেট আপ স্ট্যান্ড আপ”,”নো উওম্যান নো ক্রাই”,”বাফেলো সোলজার”,”ওয়ান লাভ”,”ব্ল্যাক প্রগ্রেস” এর মতো গান দিয়ে সংগীতপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিলেন।এছাড়া নানা ক্ষোভ ও সমস্যার প্রতিবাদ করে জয় করেছিলেন তরুণদের মন।তিনি জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে বিদ্রোহী মানুষের বুকে সাহস জুগিয়েছেন তাঁর গানের মাধ্যমে।তাঁর ব্যান্ড ওয়েলার্স ১৯৭৪ সালে ‘বার্নিন’ নামে যে অ্যালবামটি প্রকাশ করে তাঁর বিখ্যাত গান ছিলো ‘গেট আপ স্ট্যান্ড আপ’।

ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কারণে তার শিল্পীজীবন মাত্র ১৮ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১৯৮১ সালের ১১ মে ৩৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।অনেক বছর পার হলেও আজও তার জনপ্রিয়তায় এতটুকুও ভাটা পড়েনি।

আল শাহারিয়া
কবি, গীতিকার ও কন্টেন্ট রাইটার

sharia

Recent Posts

Cyclone Remal 2024: A Nightmare for Coastal Communities

Severe Cyclone Remal hit Bangladesh in May 2024 as a tropical storm of moderate intensity.…

12 months ago

Safety measures for Heatwaves – Dr. Md. Abdur Rakib

Bangladesh is experiencing a heatwave and extreme weather. Today's highest temperature reached 42.6°C in Jashore…

1 year ago

Workaholism বা কর্মে আসক্তি  – আল শাহারিয়া

Workaholism হলো মানুষের এমন এক স্বভাব যার উপকারী এবং অপকারী উভয় দিকই বিদ্যমান। এর উপর…

1 year ago

ওস্তাদে WZAMAN প্রোমো কোড ব্যবহারে ৩০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট

ওস্তাদে WZAMAN প্রোমো কোড ব্যবহার করলেই পাবেন ২০% থেকে ৩০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট। ফলে আপনার শেখার…

1 year ago

মেডুসা: গ্রিক মিথোলজির এক কালো অধ্যায় – আল শাহারিয়া

গ্রিক মিথোলজি অনুসারে, মেডুসা একসময় একজন অত্যন্ত সুন্দর নারী ছিলেন যিনি এমন এক সর্পকেশী দানবীতে…

2 years ago

রূপম ইসলামের জন্মদিনে লিখলেন আল শাহারিয়া

রূপম ইসলাম (Rupam Islam) নামটা শুনলেই রক্তের উথাল-পাথাল টের পাওয়া যায়। কথা‚ সুর আর গায়কীর…

2 years ago

This website uses cookies.